Header Ads

Irreversible (2002) | ইরিভারসেবল (২০০২) | Bangla Full Movie Review | মুভি রিভিউ বাংলা

 


Movie name: Irreversible (2002)
Original title: Irréversible
IMDB Rating: 7.3
Google Likes: 78% 
ভাষা: ফ্রেঞ্চ।
সাবটাইটেল : ইংরেজি, বাংলা ও অন্যান্য।
*হালকা স্পয়লার এবং ১৮+ সতর্কতা*
**সিনেমাটি দুর্বল হৃদয়ের দর্শকদের জন্য না**
গ্যাস্পার নয়ে (Gaspar Noé) রচিত ও পরিচালিত ২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ক্রাইম-ড্রামা-মিস্ট্রি জনরার ফরাসি মুভিটি ১৮ সার্টিফাইড মুভিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন 'ভিনসেন্ট ক্যাসেল', 'আলবার্ট ডুপন্টেল' ও সৌন্দর্যের দেবী ইতালিয় অভিনেত্রী 'মনিকা বেলুচ্চি'।
ফ্রান্সের প্যারিস শহরের কোনো এক রাতের এক মর্মান্তিক ঘটনা এবং সেটার প্রতিশোধ অভিযানকে কেন্দ্র করে মুভির কাহিনি। মূল গল্প খুবই সরল, এরকম গল্পের মুভি আমরা প্রায়ই হয়তো দেখি। কিন্তু ইরিভারসিবল সিনেমাটি ব্যতিক্রম তার গল্প বলার ধরণে, উপস্থাপনে, চিত্রায়নে এবং সাহসী অভিনয় গুণে।
সিনেমাটির দৃশ্যগুলো দেখানো হয়েছে রিভার্স ক্রনোলজিকাল অর্ডারে, প্রথমেই সবার শেষের ঘটনা, ক্রমান্বয়ে পূর্ববর্তী ঘটনা এবং শেষ দৃশ্যে দেখানো হয়েছে একেবারে শুরুর ঘটনা। প্রতিটা দৃশ্য দেখানোর পর যেন তার কার্যকারণ উন্মোচন করা হয়েছে। সিনেমার প্রতিটা শট প্রায় ৮-১০ মিনিট দীর্ঘ। অনেক দৃশ্য হ্যান্ডহ্যাল্ড ক্যামেরায় ধারণ করা। এমন কিছু দৃশ্য দেখানো হয়েছে যা সচরাচর সিনেমাতে এত দীর্ঘ সময় যাবৎ বা এতটা কদর্যভাবে উপস্থাপন করা হয় না। তবে পরিচালক কেবল সহিংসতা বা বিতৃষ্ণকর দৃশ্যতেই ক্ষান্ত হননি, তিনি এর বিপরীতে চিত্রটিও একই রকম দক্ষতায় দেখিয়েছেন মুভির দ্বিতীয়ার্ধে, নির্ঝঞ্ঝাট আনন্দময় মননশীল জীবনের নান্দনিক সৌন্দর্য।
তীব্র সহিংসতা ও পাশবিক দৃশ্যের জন্য কারো কারো কাছে এই মুভিটি কেবলই একটি জঘন্য কুৎসিত আবর্জনা। কারো কারো কাছে মুভিটিতে যৌনতা ছাড়া আর কিছুই দেখানো হয়নি। তবে কেউ কেউ খুঁজে পাবেন কিছু অন্তর্নিহিত অর্থ, চিন্তার খোরাক, কীভাবে মানুষের সুস্থ, সুন্দর, সুখী জীবন নিমিষের মধ্যে জঘন্যতম দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়ে উঠতে পারে, মানুষের ঘৃণা, প্রতিশোধস্পৃহা কতটা ভয়ঙ্কর রূপ নেয়, শান্তশিষ্ট ধীসম্পন্ন মানুষও পারিপার্শ্বিকতার প্রভাবে কতটা হিংস্র, উন্মত্ত হয়ে উঠতে পারে, কীভাবে নিরপরাধ মানুষগুলোকেও চরম মূল্য দিতে হয়, মানুষের ছোটখাটো নিরীহ সিদ্ধান্তগুলোর ফলাফল কতটা বিপর্যয়কর হতে পারে, সময় কত সহজে সবকিছু উলট পালট-করে দেয়।
যদিও দর্শক সমালোচকদের কাছে এটি একটি শিল্পগুণহীন অখাদ্য অথবা জিনিয়াস মাস্টারপিস। তবে সিনেমাটিকে ভালবাসুক বা ঘৃণা করুক এই সিনেমা তাদের মননে গভীরভাবে রেখাপাত করতে বাধ্য, সেটা হোক ইতিবাচক বা নেতিবাচক। এই মুভির মনযোগী দর্শকরা মুভিটিকে দীর্ঘদিন তাদের স্মৃতিতে বয়ে চলবে। এটাই সম্ভবত যে কোনো সৃষ্টির সবথেকে বড় সার্থকতা, মানুষের স্মৃতিতে জায়গা করে নেওয়া।
তীব্র ভায়োলেন্স, নগ্নতা, যৌনতা, বিকৃত যৌনাচার ও প্রচণ্ড ডিস্টার্বিং দৃশ্য, ক্যামেরার প্রচণ্ড দুলনি, ঘনঘন তীব্র আলোর ঝলকানি, বিরক্তিকর মিউজিকের কারণে মুভিতে শুধু মনোযোগ দেওয়াই কষ্টকর না, এটা অনেক দর্শককেই অসুস্থ করে তুলতে পারে। দুর্বল হৃদয় ও সংবেদনশীল মানসিকতার দর্শকদেরকে মুভিটি না দেখার ব্যাপারে সতর্ক করা হলো।
আইএমডিবি থেকে দর্শকদের জন্য মুভিটি সম্পর্কে কিছু আগ্রহজাগানীয়া তথ্য:
১। মুভিটির শুটিং শুরুর আগে কেবল ৩ পাতার স্ক্রিপ্ট ছিল, সব সংলাপই ইম্প্রোভাইজড।
২। বিল্ডিঙের আন্ডারগ্রাউন্ডের অবস্থিত ক্লাবের রাতের দৃশ্য ধারণের জন্য পরিচালককে হ্যান্ডহ্যাল্ড ক্যামেরার এত বেশি নড়াচড়া করেছেন যে, ক্লান্তি দূর করার জন্য তাকে কোকেন নিতে হয়েছিল।
৩। কান ফেস্টিভালে মুভিটির প্রিমিয়ার শো'র ২৪০০ দর্শকের মধ্যে ২০০ দর্শক মুভিটি দেখা শেষ না করেই বের হয়ে যান।
৪। উক্ত ২০০ দর্শকের মধ্যে অজ্ঞান হয়ে পড়া ২০ জনকে অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হয়েছিল।
৫। পরিচালক গ্যাস্পার নয়ে এই মুভিটির জন্য বাস্তবে জীবনেও স্বামী-স্ত্রী এমন ২জন অভিনেতা - অভিনেত্রী খুঁজছিলেন। সেই সময়কার দম্পতি ভিনসেন্ট ক্যাসেল ও মনিকা বেলুচ্চি ছিল মুভিটির জন্য আদর্শ কাস্ট।
৬। অতিরিক্ত রকমের ডিস্টার্বিং দৃশ্যের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় ও নিউজিল্যান্ডে মুভিটি নিষিদ্ধ করা হয়।
৭। মুভিতে দৃশ্যগুলো রিভার্স ক্রনোলোজিকাল অর্ডারে দেখানো হলেও শুটিং করা হয় ক্রনোলোজিকাল অর্ডারে।
৮। মুভিতে রিভার্স ক্রনোলোজিকাল অর্ডারে দেখানো মূলত ক্রিস্টোফার নোলানের Memento (2000) সিনেমা থেকে অনুপ্রাণিত।
৯। মুভিটির পরিচালক গ্যাস্পার নয়ের এক সাক্ষাৎকার অনুযায়ী, তিনি সিনেমা নির্মাণের সময় দর্শক প্রতিক্রিয়ায় কথা মাথায় রাখেন না। তিনি কেবলমাত্র নিজের ভালো লাগার জন্য সিনেমা নির্মাণ করেন।
১০। মুভি ক্রিটিক Steven Schneider এর করা "1,001 Movies You Must See Before You Die" নামক তালিকায় এই মুভিটি স্থান পেয়েছে।
 
রিভিউটি লিখেছেনঃ  Tasnim Alam
 
 মুভি ট্রেইলারঃ 

 
 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.