Header Ads

Scarface | Full Movie Re view | বাংলা রিভিউ ফুল মুভি | Al Pacino | Michelle Pfeiffer | Steven Bauer

 

১৪ ফেব্রুয়ারী ১৯২৯। ভ্যালেন্টাইন্স ডে'র সকালবেলা। সেদিন যুক্তরাষ্ট্রের লিংকন পার্ক শিকাগোয় এক ভয়ানক ঘটনা ঘটে। চারজন ব্যক্তি নর্থ সাইড গ্যাংয়ের সাতজন সদস্য কে দেয়ালের পাশে দাড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই ঘটনা কে Saint Valentine's Day Massacre নামক স্মরণ কর হয়। এই হামলা মূলত মাফিয়া সম্রাট আল কাপোনের আদেশে করা হয়েছিলো। আল কাপোনের আদেশের ফলেই কাপোনের প্রতিপক্ষ নর্থ সাইড গ্যাংয়ের উপর এই হামলা চালানো হয়।
"The Government is Your Government. What Are You Going To Do About It."
Scarface (1932)
Director: Howard Hawks
Genre: Crime Drama
IMDb: 7.7
Spoiler Alert
জনি লোভোর আদেশ অনুযায়ী মাফিয়া নেতা "বিগ" লুই কস্টিলো কে টনি কামোন্টে নামক ব্যক্তি হত্যা করে। শহরের দক্ষিণ অঞ্চলে এখন জনি লোভোর একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করছে। আর নিজের বসের ইচ্ছে পূর্ণ করায় টনি কামোন্টে তার বস জনি লোভোর ডানহাত হয়ে উঠে। টনি কামোন্টে বেপরোয়া হয়ে উঠে। সে তার বসের আদেশ অমান্য করে হলেও কিছুক্ষেত্রে নিজের সন্তুষ্টির জন্য বেপরোয়া আচরণ করতে থাকে। যাকে তাকে খুন করতে সে দ্বিধাবোধ করে না। জনি শহরের দক্ষিণে রাজার মতো আধিপত্য দেখালেও শহরের উত্তর অঞ্চলের ও'হারা কে খুব ভয় পায়। তার মতে সে কখনো ও'হারা কে মারতে পারবে না। কিন্তু টনি কামোন্টে তার সেই ইচ্ছে পূর্ণ করে। আর নতুন সাম্রাজ্যের পাশাপাশি টনি আর তার বস জনির জীবনে বিরাট পরিবর্তন আসে।
রাজ্য সরকার অস্ত্র সংক্রান্ত আইন কে কঠোর না করায় রাজ্যে অস্ত্র আদান প্রদান খুবই স্বাভাবিক ছিলো। খুব সহজেই রাজ্যের ভেতরের বিভিন্ন শহরে মেশিনগান পর্যন্ত পাওয়া যেতো। আর টনি কামোন্টে এবং অন্যান্য গ্যংস্টার রা এইসব অস্ত্রসস্ত্র পেয়ে তাদের ত্রাসের রাজত্ব বজায় রাখতো। যেকোনো সময় গ্যাং ওয়ারের অংশ হিসেবে হত্যার ঘটনা ঘটে যেতো। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শুধু নির্বাক দর্শকের মতো চেয়ে থাকতো।
মুভি ৯০ বছর পুরাতন হলেও গান ভায়োলেন্সের প্রদর্শনীর ক্ষেত্রে আজকের অনেক মুভিকেও এই মুভি হার মানাবে। মূল চরিত্র টনি'র বেপরোয়া আচরণ তাকে উন্মাদের মতো করে তুলে। যার ফলে শহর ব্যাপক প্রকার ধ্বংযজ্ঞের সাক্ষী হয়। আর টনি কামোন্টে চরিত্রে পল মিউনি তার নিজস্ব শৈলী বজায় রেখেছেন।
মুভির পরিচালক হাওয়ার্ড হকস এক অনবদ্য নির্মাণ করেছেন। মুভির প্রতিটা গান ভায়োলেন্সের দৃশ্য সেইসময় থেকে অনেক এগিয়ে ছিলো। পল মিউনি কে প্রতিপক্ষের কার চেসিং দৃশ্যটি সব থেকে সুন্দর আর উত্তেজনাপূর্ণ দৃশ্যের একটি ছিলো। চরিত্র গুলোর বন্ধন কেও প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। টনি'র পারিবারিক জীবন আর অপরাধী জীবন দুটাতেই চলমান উতালপাতাল মুভিতে তুলে ধরা হয়েছে।
তৎকালীন সময়ের পরিবেশ আর জনজীবনের মধ্যে বিরাজমান আতংকের অসাধারণ উপস্থাপন করা হয়েছে। মুভিতে Saint Valentine's Massacre এর আদলে একটি দৃশ্যও রয়েছে।মুভিটি বাস্তব নানান ঘটনার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা। তাই মুভির শুরুর দিকে এবং মুভির মধ্যে সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রশ্ন তুলা হয়েছে।
মুভিতে শুধু বর্বরতা আর ধ্বংসজ্ঞ ছাড়াও অনেক কিছুর উপস্থিতি রয়েছে। টনি কামোন্টে'র সেক্রেটারি এঞ্জেলোর হাস্যকর দৃশ্য গুলো মুখে হাসি ফুটাতে বাধ্য করে। টনি কামোন্টে আর তার বস জনি লোভোর গার্লফ্রেন্ড পপির মধ্যকার সম্পর্কও প্রাধান্য পেয়েছে। আবার টনি আর তার ছোটবোন চেস্কার মধ্যকার ব্যতিক্রমী সম্পর্কও লক্ষ্য করা যায়।
এই মুভির ১৯৮৩ সালে রিমেক করা হয়। যাতে আল পাচিনো টনি মন্টানা হিসেবে অভিনয় করেন। মূল গল্পের মিল থাকলেও ১৯৩২ সালের স্কারফেস আর ১৯৮৩ সালের স্কারফেসে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্যণীয়। টনি কামোন্টে আর টনি মন্টানা দু'টো চরিত্রের মধ্য বেশকিছু পার্থক্যও লক্ষ্য করা যায়। ১৯৮৩ সালের স্কারফেসে আল পাচিনো নিজস্ব ভাবে চরিত্রে অভিনয় করেন। যা ১৯৩২ সালের স্কারফেসের প্রধান চরিত্রে থাকা পল মিউনির থেকে ভিন্ন ছিলো। যদিও ১৯৩২ সালের স্কারফেস আর ১৯৮৩ সালের স্কারফেসে বেশ ভায়োলেন্সের দেখা মিলে তবুও মাদকদ্রব্যের প্রদর্শনী আর সংলাপে আক্রমণাত্মক আর খারাপ ভাষা ব্যাবহার ক্ষেত্রে ১৯৮৩ সালের স্কারফেসের ক্ষেত্রে ১৯৩২ সালের স্কারফেস অনেক পিছিয়ে ছিলো। তৎকালীন সময়ের ফিল্মমেকিংয়ে এইধরনের স্বাধীনতাও ছিলো না।
মুভির বর্বরতা যেমন ধ্বংসযজ্ঞ আর ত্রাসের উপস্থাপন করে। ঠিক তেমনি মুভির কিছু দৃশ্য অদ্ভুত সৌন্দর্যের প্রকাশ করে। সুন্দর ক্যামেরাওয়ার্কের ফলে মুভি দেখার সময়ও প্রসংশা করতে হয়। এতো বছর আগের মুভিতে এতোকিছু তুলে ধরা সত্যিই এক অনবদ্য সৃষ্টি ছিলো।
 
রিভিউটি লিখেছেনঃ MahiDur Rahman Tawhid
 
মুভি ট্রেইলারঃ  

 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.