Header Ads

Bangalore Days Romantic Movie Review Bangla | বাংলা রিভিউ ব্যাংগালুর ডেস | Dulquer Salmaan | Nivin Pauly | Nazriya Nazim

 

Movie: Bangalore Days.
Genre: Romance/Drama.
Director: Anjali Menon.
Distributed by: August Cinema.
Cast: Nazriya Nazim, Nivin Pauly, Dulquer Salmaan, Fahadh Faasil, Parvathy Thiruvothu, Isha Talwar, Paris Laxmi, Nithya Menen.
Music by: Gopi Sunder.
Release Date: May 30, 2014.
Country: India.
Industry: Mollywood.
Language: Malayalam.
Duration: 2h 53m.
Subtitles: Arabic, Bengali, English & More Languages.
IMDB Rating: 8.3/10.
⚠️⚠️⚠️কিঞ্চিৎ স্পয়লার⚠️⚠️⚠️
মালায়ালাম ভাষায় নির্মিত ২০১৪ সালের এই ‘কমার্শিয়াল’ সিনেমাটি ঘরানা হিসেবে রোমান্টিক, ড্রামা, আর কমেডির সুষম সংমিশ্রণ। ছবিটির লেখক-পরিচালক অঞ্জলি মেনন। গুণী এই মানুষটি এর আগে ২০০৯ সালে পরিচালনা করেছেন কেরালা ক্যাফে, ২০১২ সালে মাঞ্জাডিকুরু (সৌভাগ্যের লাল বীজ)। আর ২০১৮ সালে কুড়ে (একসাথে)। এছাড়াও তিনি ২০১২ সালে উস্তাদ হোটেল ছবির জন্যে সংলাপ লেখেন, যা সেই সালে সেরা সংলাপের জন্য জাতীয় পুরস্কার পায়। 'ব্যাঙ্গালোর ডেজ' ছবিটি ২০১৪ সালে সবচেয়ে বেশি আয় করা মালায়ালাম ছবি। ছবিটির আইএমডিবি রেটিং ৮.৩। এছাড়াও কেরালা স্টেট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস, ৬২ তম ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস (সাউথ), এশিয়ানেট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস ও এশিয়াভিশন অ্যাওয়ার্ডস-এ সিনেমাটি একাধিক বিভাগে পুরস্কার পায়।
সিনেমাটি তিন কাজিনকে ঘিরে। অপরাপর গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রগুলো এদেরকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়। প্রথম কাজিন ‘কুট্টন’, যার চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিভিন পাউলি। ছবিতে তিনি একজন সরল মনের, সোজা বুদ্ধির, নিরীহ তরুণ। পেশায় তিনি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। বাবা-মায়ের একান্ত বাধ্য, জীবনে জটিলতাহীন আর বন্ধুত্বে বিশ্বস্ত। মোটকথা, প্রতিটি বাবা-মায়ের স্বপ্নের আদর্শ সন্তান।
দ্বিতীয় কাজিন অর্জুন বা আজ্জু, যার চরিত্রে অভিনয় করেছেন দুলকার সালমান। অনেকে তাকে চেনেন ইরফান খানের সাথে কারওঁয়া (২০১৮) ছবিতে দেখে। ডিভোর্সী বাবা-মায়ের সন্তান হিসেবে সবার একটু বেশি আদরের অর্জুন একদিকে বোহেমিয়ান, অন্যদিকে বাইক-রেসার, আবার বন্ধু-অন্তঃপ্রাণ। এককথায় ফ্রি-স্পিরিটেড এই চরিত্র মুহূর্তে দর্শককে আপন করে নেবে।
তৃতীয় কাজিন দিব্যা ‘কুঞ্জু’ প্রকাশ, অভিনয়ে নাজরিয়া নাজিম। অসম্ভব চমৎকার এক্সপ্রেশনের এই মেয়েটি এমবিএ করতে আগ্রহী। সর্বদা হাসিখুশি থেকে, সবার সাথে মিলেমিশে চলাতেই জীবনে আনন্দ পায় প্রাণোচ্ছ্বল এই তরুণী।
চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের হিসেবে আলাদা এই তিনজনের মাঝে একটিই সাধারণ সূত্র: বড় হয়ে সবাই ব্যাঙ্গালোর যেতে চায়। একটা সময় তিনজন সেখানে যায়ও। তারপর জীবন কাকে, কীভাবে, কোন ঘূর্ণিস্রোতে টেনে নেয় তারই হৃদয়াবেগপূর্ণ বয়ান বাকি এই সিনেমা।
সাধের ব্যাঙ্গালোরে কুট্টন আসে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি পেয়ে। এখানে এসে কুট্টনের লক্ষ্য এক সাদাসিধে মালায়ালাম তরুণীকে বিয়ে করা। এমন মেয়ে, যে তাকে সুখী দাম্পত্যজীবন দেবে। আজ্জু ব্যাঙ্গালোরে আসে বাইক রেস করতে। অবচেতনে তার লক্ষ্য হলো, বাইক রেসের গতিময় জীবনে থেকে নিজের জীবনের সাথে নিজের বোঝাপড়া সুস্থিত করা। অনেকটা লোহা দিয়ে লোহা কাটার মতোই। আর দিব্যা আসে কর্পোরেট একজিকিউটিভ শিবার সাথে বৈবাহিক সূত্রে। দিব্যার লক্ষ্য তার ভীষণরকম অন্তর্মুখী স্বামীর সাথে স্বাভাবিক দাম্পত্যজীবন শুরু করা।
ব্যাঙ্গালোরে কুট্টন কি পাবে তার স্বপ্নের জীবনসঙ্গী? সে কি বিমানবালা মীনাক্ষি (ঈশা তালওয়ার), যার স্মার্টনেস আর স্টাইল স্টেটমেন্টে সে প্রথম দর্শনেই ঘায়েল? নাকি সে ভারতনাট্যম নৃত্যশিল্পী মিশেল, যার অমলিন হাসি চারপাশে আন্তরিকতা ছড়িয়ে দেয়? জীবনের স্বাভাবিক সব চাওয়াগুলো কি স্বাভাবিক গতিধারায়ই পূরণ হয়? নাকি ব্যাঙ্গালোর কুট্টনের জন্য সাজিয়ে রাখে ডিভাইন কোনো কমেডি বা কোনো ট্র্যাজেডি?
অর্জুনের সাথে পরিচয় হয় রেডিও জোকার সারার। সারার চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিষ্টি চেহারার পার্বতী (ইরফান খানের সাথে কারিব কারিব সিঙ্গেল সিনেমাতে যিনি নায়িকা হয়েছিলেন)। সারার চলাফেরা হুইল চেয়ারে। কিন্তু শারীরিক সীমাবদ্ধতা তার স্বাভাবিক প্রাণ-প্রাচুর্যকে একটুও নষ্ট করতে পারেনি। সবল দু’পা-সহ অস্থির অর্জুন তাই হুইলচেয়ারে থাকা সারার কাছে বার বার ফিরে আসে। অর্জুন-সারা দুজনের সব সিকোয়েন্সে সারার মুখভঙ্গি আর তাদের পারস্পরিক দৃষ্টিবিনিময়ের দৃশ্যগুলো স্ক্রিনজুড়ে কোমলতা ছড়ায়। কিন্তু তাদের পরিণতিই বা কী হবে? অর্জুন কি পাবে অভ্যন্তরীণ স্থিরতা? আর সারা? সে কি অর্জুনের মাঝে পাবে তার সংগ্রামময় জীবনের ভরসার তীর?
হাসিখুশী দিব্যার চ্যালেঞ্জ তার অন্তর্মুখী স্বামী শিবা (ফাহাদ ফাসিল)। যে মানুষের ব্যক্তিত্বের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হারিয়ে গেছে, এমন মানুষের চরিত্রে ফাহাদ ফাসিলের অভিনয় অনবদ্য। বিভিন্ন ফ্রেমে তার চোখের এক্সপ্রেশন দর্শককে ভাবায়, চরিত্রের সাথে আরো একাত্ম করে। সোশ্যাল আউটকাস্ট শিবা, প্রতিবেশীদের সাথে দিব্যার মন খুলে মেলামেশাকে সরবে বাধা দেয়। অর্জুনের সাথে বাইকে ওঠাকে বিপদজনক হিসেবে সজোরে সতর্ক করে দেয়। শিবা কি বরাবর এরকমই? নাকি তার ভেতরেও আছে এক হারানো আটলান্টিস? দিব্যা কি শিবার সাথে পাবে সুখী দাম্পত্যজীবনের খোঁজ? শিবার রিডেম্পশনই বা কত দূরে? কীভাবে?
ব্যাঙ্গালোর নগরী তার প্রবাহমান জীবনধারার অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য নিয়ে কীভাবে ধরা দেয় এই সবার জীবনে, তারই সুদক্ষ চিত্রায়ণ সিনেমাটির পরতে পরতে। এত চরিত্র, এত সাব-প্লট, কিন্তু পরিচালক অঞ্জলি মেনন সব সামলেছেন কঠোর পরিমিতিতে। নিখাদ বাণিজ্যিক সিনেমাও যে সুসামঞ্জস্যপূর্ণ চিত্রনাট্যের গুণে পাতে দেবার মতো সুস্বাদু হয়ে ওঠে, এটি তার উজ্জ্বল উদাহরণ। সিনেমাটি দেখার সময় সচেতন দর্শক কখনও কখনও ঠিকই ধরতে পারবেন আগামীতে কী হতে যাচ্ছে। কিন্তু তারপরও পর্দায় চোখ আটকে থাকবে অটুট আগ্রহে। রিয়েল-লাইফ সেট, স্বাভাবিক ডায়লগ (এমনকি সাবটাইটেলেও সেটার লুকোনো ধার সহজেই বোঝা যায়), পরিমিত অভিনয়, সঙ্গতিপূর্ণ ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়াও শেষ বড় কারণ: সিনেমাটির হৃদয়টা যে অনেকটাই বড়।

যারা দেখেননি তারা দেখে নিতে পারেন অসাধারণ এই মুভিটি আর যারা দেখেছেন তাদের কাছে কেমন লেগেছে সেটা অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।
ভুল-ত্রুটিগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো!!!🙏🙏🙏🙏🙏
Happy Watching
 
রিভিউটি লিখেছেনঃ  Nasim Mahmud Nirob

 
 
মুভি ট্রেইলারঃ

 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.