Header Ads

Operation Sundarbans Bangla Movie Review | অপারেশন সুন্দরবন বাংলা মুভি রিভিউ | Riaz | Siam Ahmed | Ziaul Roshan | Tuya Chakraborty

 

রিভিউ : অপারেশন সুন্দরবন
স্পয়লার নেই
আজ ৩৫টি হলে মুক্তি পেলো একশন থ্রিলারপ্রেমীদের প্রতীক্ষিত সিনেমা 'অপারেশন সুন্দরবন'। দেখা শেষে অনেকটা সময় মনে করার চেষ্টা করেছি শুরু থেকে শেষটা। এখন শুধু বলা যায়, এ পর্যন্ত দেশে নির্মিত ফাস্ট, টেকনিক্যালি সাউন্ড ও উপভোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে এটা প্রথমদিকেই থাকবে। পুরোটা সিনেমাজুড়ে অপারেশন ঘিরে গল্প, র্যাবের দু'হাত ভরে দেয়া সহযোগিতা, শিল্পীদের পারফরম্যান্স চোখে পড়েছে।
গল্পটা সবার জানা - সুন্দরবনের দস্যুমুক্তি। তবে সিনেমায় কী ডকুমেন্টারির মত সেই অপারেশনটাই শুধু দেখানো হলো! একদম না। ট্রেলার দেখে সিনেমার ব্যাপ্তি, স্ক্রিনপ্লের জমাট আবহ আর শেষটা বেশিরভাগ দর্শক ভাবতে পারবেন না। শুরুতেই সুন্দরবনের ঐতিহ্য, অদ্বিতীয় ম্যানগ্রোভ হিসাবে সুনাম আর দস্যুতার লম্বা ইতিহাসটা খুব সুন্দরভাবে কমিক প্রেজেন্টেশন করায় আপনি হুক হয়ে যেতে বাধ্য। শুরুতে গজাল বাহিনীর নির্মমতা ও র্যাবের তাদের ধরতে ব্যর্থ হবার ব্যাপারটা দেখি। এরপর ট্রেলারে যেমন বলা হয়েছিল - 'এখানে তারাই জেতে, যারা বনটাকে হাতের মুঠোর মত চেনে!' সেটার প্রতিরূপ দেখা গেল। রোশান এখানে রিশান আর সিয়াম হলো সায়েম। দুজনেই কোর্সমেট হওয়ায় যখন এদের যৌথ অপারেশনের জন্য টিম গঠন করা হয়, সিনেমা আরো জমতে শুরু করে। গজাল বাহিনী থেকে তারা মিশনে নামে মনা ডাকাতের দলটিকে ধরতে। তখনই একের পর এক বের হতে থাকে অজানা ও অপ্রিয় কিছু সত্য। আর গল্প এগোয় সেই সত্যকে প্রকাশের মিশন সাথে নিয়ে।
অপারেশনকে হুবহু বাস্তবতায় রূপ না দিয়ে সিনেমাটিক রাখার চেষ্টা ছিল, দস্যুতার বাইরে সে দলে যোগ দেয়া সাধারণ মানুষের গল্প ছিল, দস্যুতা থেকে ফিরে আসবার গল্প ছিল, ডাঙায় থেকে যারা বনের দস্যুদের সাহায্য করে তাদের মুখোশ খুলে দেবার গল্প ছিল। সিনেমার গতি যেমন এর শক্তি, তেমনি দূর্বলতাও। খুব ফাস্ট পেস হওয়ায় মনোযোগ সরালে মিস করতে পারেন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বা টুইস্ট। গানগুলো আহামরি মানিয়েছে তা বলা যায় না, তবে হলে দেখতে ভাল লেগেছে। সৌমদীপ্ত ভিকি গুইন ও রম্যদীপ সাহার ক্যামেরার খাটুনি প্রশংসনীয়।
ফারিয়া এখানে বাঘ গবেষক হিসাবে ও দর্শনা বণিক ডাক্তার চরিত্রে সিয়াম ও রোশানের বিপরীতে অভিনয় করেছে সমানতালে ও গুরুত্বপূর্ণ সময়জুড়ে। সিনেমায় একটি চরিত্রকেও অপব্যয় করা হয় নি, গল্পটিকেও অসম্পূর্ণ রাখা হয় নি। তাসকিনকে দেখা গেছে আবারো এক রহস্যময় চরিত্রে। অল্প সময়েও ভাল করেছেন শতাব্দী ওয়াদুদ, রওনক হাসান, রাইসুল ইসলাম আসাদ, আরমান পারভেজ মুরাদ। চমক দিয়ে বেশ খানিকটা সময়জুড়ে দারুন অভিনয় করেছে মনোজ প্রামাণিক ও তুয়া চক্রবর্তী। সামিনা বাশার, তানযিল তুহিনদের মত নতুনরাও নজর কেড়েছে।
রিয়াজ, ফারিয়ার অভিনয় ভাল লাগে নি তবে দর্শনা ভাল করেছে। সিয়ামের জন্য বছরটা ভালই যাচ্ছে। রোমান্টিক এঙ্গেল থাকলেও এখানে সিয়াম ও ফারিয়ার সরাসরি রসায়ন নেই। রোশান মোটামুটি, যতটা আশা করেছি ততটা পাইনি। মাল্টিকাস্টিং সিনেমা হওয়ায় অনেকে টাচ এন্ড গো এক্টিং করেছেন।
টেকনিক্যালি সিনেমায় খুত ধরবার জায়গা কম। তবে বিভিন্ন দৃশ্যে বাঘ দেখানোয় সিজিআই ত্রুটি চোখে পড়েছে। বিরতির আগের অংশটার বিল্ড আপ চমৎকার তবে ক্লাইম্যাক্সে টুইস্ট বেশি হওয়ায় বিরক্ত লেগেছে। যদিও আড়াই ঘন্টার কাছাকাছি দৈর্ঘ্য তবুও ঝুলে যায় নি কোথাও, চাইলে চরিত্র কমিয়ে আনা যেত। তবে স্ক্রিনপ্লে টানটান রাখার ক্রেডিট রাইটার নাজিমউদ দৌলার।
সবমিলিয়ে সিনেমাটি হলে দেখে পয়সা উসুল করার মত। দীপংকর দীপন ও তার টিম কী নিদারুণ ত্যাগ ও পরিশ্রম করেছেন সেটা পর্দায় দর্শক টের পাবেই। বাংলা সিনেমার শুভক্ষণে 'অপারেশন সুন্দরবন' এক দারুন সিনেমাটিক এক্সপেরিয়েন্স নিঃসন্দেহে।


রিভিউটি লিখেছেনঃ Maruf Emon

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.